লক্ষ্মীপুরের মানবিক এসপির আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ শহরের অটোওয়ালা এবং অসহায় মানুষগুলো

বাংলাদেশ

কাজী নাঈম উদ্দিন, ডেস্ক রিপোর্টঃ

লক্ষ্মীপুরের মানবিক পুলিশ সুপার(এসপি)
মাহফুজ্জামান আশরাফের আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ শহরের অটো রিকসা চালক থেকে শুরু করে শহরের অলিতে গলিতে থাকা অসহায় মানুষগুলোর খোঁজ খবর রাখেন ইফতারে আগে পরে সেহরির পরেও এমনকি রাতদিন ছাব্বিশ ঘন্টায় তাদের পাশে থাকতে তিনি সাচ্ছন্দ্যবোধ মনে করেন,,

মানবিক পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ (১৭ এপ্রিল) যখন রাস্তা দিয়ে হাটছিলে তখন পুলিশ সুপার এক অটোরিকশা চালকের হাঁসি মাখা চেহারা দেখি মুগ্ধ তার সাথে কথোপকথন শুরু করেন। সেই আলাপচারিতা এসপির ব্যক্তিগত ফেইজবুক থেকে নেওয়া ঘটনাটি হুবুহুব তুলে ধরা হলো।

রাস্তা দিয়ে হাটছি।চলতে চলতে ব্রীজের উপর উঠে চলতেই ডান দিকে তাকাতেই এক অটোওয়ালার চোখে চোখ পড়তেই চলন্ত অটো থামিয়ে আমার দিকে হাত তুলে হাসি দিয়ে বেশ জোরে বলে উঠলো,

— স্লামুআলাইকুম স্যার

তার সালাম দেয়াতে আমি সালামের উত্তর দিতে দিতেই তার দিকে বাম পাশ হতে ডান দিকে তার অটোর কাছে যেতেই সে অটো থেকে নেমে এলেই আমি হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,

— কেমন আছেন?

আমার হাত ধরে আবেগাপ্লুত হয়ে অনেক আবেগের কথা উচ্ছ্বসিত হৃদয়ে বলে গেল।কি যে উৎফুল্ল আর কৃতজ্ঞচিত্তে তার চিত্ত বিকশিত করলো তার শিল্পের নানান রংয়ে আর প্রানবন্ত অবারিত ভালবাসায়।সময়টা খুব অল্পতেই যেটুকু ক্ষণিকেই আবেগতাড়িত হয়ে প্রকাশ করে গেল তার অভিব্যক্তি তা যেন আমার জীবনের অসাধারণ অতুলনীয় শ্রেষ্ঠ এক পাওয়া।

একজন পুলিশ সুপার হিসেবে,খুবই সাধারণ এক অটোওয়ালার এমন আবেগ ভরা ভালবাসা আর আমার সমন্ধে তার যে নিগুঢ় হৃদয় নিংড়ানো ব্যাক্ত প্রকাশ তা যেন আকাশসম বিশালতাকেও ছাড়িয়ে গেল নিমিষেই।

যানজট লেগে যাচ্ছিলো,
দ্রুতই তাকে বিদায় দিলাম।পেছনে থাকা আর এক অটোওয়ালা শুনে যাচ্ছিলো। তার দিকে তাকিয়ে তার সাথেও হাতে হাত মিলিয়ে গেল আমার।

ইফতারি করেই অফিসে চলে এলাম।
দুই দিন অফিসে আসা হয়নি।সরকারি কাজে কর্মস্থলের বাহিরে ছিলাম।সকালে অফিসে এসেই কাজের ব্যাস্ততা এমন শুরু হয়ে যায়, যার কোন ফুসরত নেই।একটার পর একটা সেকশনের কাজ।ইফতারের আগে আগেই বাসায় চলে আসি অনেক কাজ অসমাপ্ত রেখেই জানালাম,

— এখন আর নয়!

কলিং বেল হালকা চাপ দিতেই সোহেল এসে হাজির।বললাম,কাউকে আর প্রবেশের অনুমতি দেয়া যাবে না।হাতে সময় নেই।বাসায় যাবো।ইফতারের পর অফিসে আসবো।

— করার কিছুই নেই।কাজের অসম পাহাড় জমে গিয়েছে।ঈদের আগমন আর অফিস বন্ধের বার্তায় কাজের যেন তাড়াহুড়ো।সকল অফিস বন্ধ হলেও পুলিশের কার্যক্রম আরো বেড়ে যায়।সবারই নিরাপত্তা বিষয়ে পত্র আসতে থাকে।

সান্ধকালিন রমযানের পবিত্রতা সমাপ্ত করেই চলে এলাম অফিসে।অনেকের সাথে সাক্ষাত দিতে হলো।সবাই ব্যাস্ত আর সৌজন্যে সাক্ষাত আর ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা বিনিময়।কাজ শেষ করতে রাত প্রায় সোয়া এগারটা বেজে গেলে রাত্রীকালীন ঈদের মার্কেটের কি অবস্থা তা দেখতে ইচ্ছে হলো।

আচমকাই চলে এলাম শহরের ব্যাস্ততম স্থানে।অসহনীয় গরমেই কষ্টকরা সহকর্মীদের একটু পাশে থাকতে। তাদের সাথে সাথী হয়ে একটু পথ চললাম।শহরের মানুষের নিরাপদ শপিং আর নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিন রাত প্রখর গরমে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।

তবুও ভালো থাকুক আমার প্রিয় লক্ষ্মীপুর…

১৭.০৪.২৩

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *